November 22, 2024, 1:00 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া অংশে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চারটি উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রাম এখন পানিবন্দি। নদী সংলগ্ন এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে ফসলি জমি ডুবে গেছে। ডুবে গেছে সড়ক। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এলাকাটি শীত মৌসুমে বিভিন্ন ডাল উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এবার ডাল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পদ্মাতে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। যা আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। পদ্মা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।
পাউবো’র কর্মকর্তারা বলছেন, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং এ মাসের শেষের দিকে কমতে শুরু করে। গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মায় ফের পানি বাড়তে শুরু করে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এই চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৪০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফসলি জমি ও সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে আছে চরবাসী। চারপাশে পানি ওঠে যাওয়ায় ইতিমধ্যে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, ইউনিয়নের ২১ গ্রামই প্রায় পানিবন্দি। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। চর এলাকার আবাদি জমিগুলো ডুবে গেছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
তিনি জানান, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যেও ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের দেয়া তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, মরিচা, ফিলিপনগর, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমির মাষকলাই পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া মরিচ ৭০ হেক্টর, কলা ৭৩ হেক্টর ও সবজি ১৩ হেক্টরের মতো পানিতে ডুবে গেছে।
তিনি বলেন, পানি কয়েকদিন স্থির থাকলে এসব ডুবে যাওয়া ফসল পচে যাবে। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে, কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, পদ্মার পানি আরও কয়েক দিন বাড়তে পারে। তিনি জানান, উজান থেকে বৃষ্টিপাতের পানি নেমে আসছে।
তিনি জানান, ঐসব এলাকায় প্রায় মত কিলোমিটার নদী পাড়ে কোন বাঁধ নেই। পানি সরাসরি প্রবেশ করে। তার মতে, নিমজ্জিত চরাঞ্চলের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম শুক্রবার জানান, যদি বৃষ্টিপাত না বাড়ে, তবে পানি থেকে তিনদিনের মধ্যে কমতে শুরু করবে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওবায়দুল্লাহ শুক্রবার জানান, উপজেলায় সের খোলা হয়েছে। মনিটরিং চলছে। । পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply